সপ্তম শ্রেণী । ভূগোল । বায়ুচাপ । তৃতীয় অধ্যায় । প্রশ্ন ও উত্তর । Class-7 Geography Chapter 3 air pressure

 তৃতীয় অধ্যায়
বায়ুচাপ

আমরা সকলে বায়ু সমুদ্রে ডুবে আছি। বায়ু ছাড়া আমরা এক মুহূর্তে বাঁচতে পারব না। প্রতি বর্গসেন্টিমিটারে বাতাসের চাপ প্রায় ১ কিলোগ্রাম আর প্রতি বর্গফুটে প্রায় ১ টন। আমরা বায়ুর চাপ বুঝি না কারণ আমাদের শরীরে বাতাস আছে সেই বাতাস ও বাইরের বাতাস সমানও বিপরীত চাপ দিচ্ছে।

বায়ুচাপ কাকে বলে ? 

গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলো আলগাভাবে ঘুরে বেড়ায় পরস্পরের মধ্যে ধাক্কা লাগায়। কোনো বস্তুর সঙ্গে বাতাসের এই অণুগুলো যখন থাকা লাগে তখন এই ধাক্কার কারণে যে চাপ সৃষ্টি হয় তাই বায়ুচাপ। দৈনন্দিন জীবনে এবং আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে বায়ুচাপ খুব গুরুত্বপূর্ণ।


সপ্তম শ্রেণী । ভূগোল । বায়ুচাপ । তৃতীয় অধ্যায় । প্রশ্ন ও উত্তর । Class-7 Geography Chapter 3 air pressure



ব্যারোমিটার কি কাজে লাগে ? 

পৃথিবাপৃষ্ঠে বা সমুদ্রসমতলে বায়ুচাপ সবথেকে বেশি হয়। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুচাপ করতে থাকে। সমুদ্র সমতলে বায়ুর চাপ মাপা হয় মিলিবার এককে। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুচাপ ১০১৩.২৫ মিলিবার। বায়ু চাপ মাপার যন্ত্র হল ব্যারোমিটার

বায়ুর উষ্ণতার পরিবর্তন হলে বায়ুর আয়তন ঘনত্বের পরিবর্তন হয়। শীতল মেরু অঞ্চলে বায়ুর চাপ বেশি উষ্ণ, নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম। ভূমির উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর ঘনত্ব কমে বায়ুর চাপ কমে।

জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু হালকা হয়। জলীয় বাষ্প বায়ুতে মিশলে যে নিম্ন চাপ তৈরি হয় তার ফলেই আবহাওয়া অশান্ত হয়ে দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়।

সমচাপ রেখা কাকে বলে ?

নির্দিষ্ট সময়ে একই পরিমাণ বায়চাপযুক্ত অঞ্চল গুলোকে মানচিত্রে যে কাল্পনিক রেখার দ্রারা যুক্ত করা হয় তাকে সমচাপ রেখা বলে। সমচাপ রেখায় বায়ুচাপকে মিলিবার এককে দেখানো হয়।

যে সব স্থানের বায়ুর চাপ আশে পাশে বায়ুর চাপ থেকে বেশি, তাকে উচ্চচাপ অঞ্চল আর যেখানে বায়ুচাপ আশেপাশে থেকে কম তাকে নিম্নচাপ অঞ্চল বলে। 

বায়ু উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল থেকে নিম্নচাপযুক্ত অঞ্চলের দিকে বয়ে যায়। অর্থাৎ বায়ুচাপের পার্থক্যই বায়ুপ্রবাহের প্রধান কারণ।


প্রশ্ন ১। একটা বড়ো জলের বোতল বা দুধের বোতল মুখ খোলা অবস্থায় টেবিলের ওপর শুইয়ে রাখো। এবার কাগজ পাকিয়ে ছোটো বল-এর মতো বানাও। বলটা যেন বোতলের খোলা মুখের প্রায় অর্ধেক মাপের হয়। এবার বলটাকে ফুঁ দিয়ে বোতলের মধ্যে ঢোকাবার চেষ্টা করে দেখো।

বন্ধুদের সঙ্গে নিয়েও পরীক্ষাটা করে দেখতে পাবো। যে যত জোরেই ফুঁ দিয়ে চেষ্টা বাবুক না কেন, বলটা কিছুতে বোতলের মধ্যে ঢুকবে না। কেন ঢুকবে না বলো তো?

উত্তর। কারণ জলের বোতল বা দুধের বোতলের মধ্যে চাপের পরিমান খুব বেশি। এর মধ্যে জায়গাও খুব সংকীর্ণ। এর মধ্যে গ্যাসীয় পদার্থের অনুগুলো ঘুরে বেড়ায় এবং পরস্পর থাকা যায়। তাই চাপের সৃষ্টি হয়। এটা বায়ুচাপের জন্যই হয়। চাপের সৃষ্টি হয়। এটা বায়ুচাপের জন্যই হয়। কাগজের বলটি যখন যাঁকা জায়গায় থাকে তখন বায়ুর চাপ কম থাকে তাইকম চাপ থেকে যখন জলের বোতল বা দুধের বোতলের মধ্যে বেশি চাপের স্থানে প্রবেশ করলে হয় তখন বলটা ঢোকে না।

কী হবে দেখো। 

প্রশ্ন ২। একটা ছেলেকে টেবিলের কানায় এমন ভাবে রাখো যাতে স্কেলের বেশিরভাগ অংশ টেবিলের বাইরে বেরিয়ে থাকে। এবার স্কেলের বাইরের প্রান্তটায় একটু টোকো সারলেই স্কেলটা পড়ে যাবে। এবার একটা খবরের কাগজ স্কেলের টেবিলের ওপর থাকা অংশটার ওপর বিছিয়ে দিয়ে একটু চাপ দাও। তারপর টাকা মেরে দেখো কী হয়।

উঃ স্কেলটা তার পড়বে না কারণ এটি বায়ুর নিম্নচাপের জন্য হচ্ছে। খবরের কাগজ স্কেলটাকে ধরে রেখেছে কারণ আমরা জানি বায়ু নিম্নচাপ দেয়। তাই স্কেলটি আর পড়বে না।

কী হয় দেখো: 

প্রশ্ন ৩। একটা কিছুটা জলভরা প্লাস্টিকের বোতলের মুখটা ভালো করে পাতলা পলিথিন বা কর্কের ছিপি দিয়ে আটকে দাও। একটা সরু নল ছিপিটার মধ্যে দিয়ে বোতলের মধ্যে ঢুকিয়ে দাও। এবার নলটার মধ্যে দিয়ে বোতলের ভিতর জোরে কয়েকবার ফুঁ দাও-

উত্তর। দেখা গেল বোতলের খালি অংশে কিছুটা বাতাস ছিল এবং সেটি বন্ধ অবস্থায় তার মধ্যে বায়ুর চাপ বেশি ছিল।বাইরের থেকে ফুঁ দিলে সেটির প্রসারণ বেড়ে যায় এবং বুদবুদ আকারে ফুলতে থাকবে।

এবার আমরা দুটো গল্প পড়বো, তারপর দুটো প্রশ্ন খুঁজে বিজ্ঞানীরা মগজাস্ত্র নিয়ে লেগে পড়ো।

প্রশ্ন ৪। আজ দিনটা ভীষণ গরম ছিল। সারাদিন খাঁ খাঁ রোদ। সৃজন স্কুল থেকে ফিরে বিক্লেটা মাঠেই খেলে রোজ।কিন্তু আজ আর মা তাকে মাঠে যেতে দিল না। কারণ আকাশ জুড়ে কালো মেঘ। আকাশটা কেমন থমথমে হয়ে আছে, গাছের একটা পাতাও নড়ছে না। হঠাৎ ঝড় উঠল। জানালা, দরজায় প্রচণ্ড জোরে বাতাস আছড়ে পড়তে থাকল। বৃষ্টি শুরু হল। বলোতো, ঝড় ওঠার আগে আকাশটা এরকম থমথমে হয়ে থাকে। একটুও বাতাস বয় না কেন?

উত্তর। কারণ গরমে আশেপাশের ভূপৃষ্ঠের বায়ু উত্তপ্ত হয়েছিল। এই উত্তপ্ত বায়ু হালকা হয়ে ওপরে উঠে যায়। অতি দ্রুতবেগে এই কাজটি হওয়ার ফলে বায়ুর পার্শ্বপ্রবাহ কোন কাজ করেনি। তাই একটুও বাতাস দেয়নি।

প্রশ্ন ৫। পূজোর ছুটিতে ঝিনুক বাবা মায়ের সঙ্গে বেড়াতে গেল গোমুখে। গঙ্গা নদীর উৎস গোমুখ। তুষার গুহা, হিমালয় পর্বতের খুব উঁচুঠে (প্রায় ৩১০০ মিটার উঁচুতে) অবস্থিত। জায়গাটা খুব সুন্দর কিন্তু ঝিনুকের মন খারাপ, কারণ খাওয়াদাওয়ার অসুবিধা। চাল-ডাল কিছুই ভালো করে সিদ্ধ হচ্ছে না। বাবাকে জিঞ্জেস করতে বলল উঁচু পাহাড়ি অঞ্চলে এরকম অসুবিধা হয়, ভেবে দেখতো, উঁচু অঞ্চলে ডাল, ডাল, ভালো সিদ্ধ করতে সমস্যা হয় কেন?

উত্তর। উঁচু স্থানে বায়ুর চাপ কম থাকে ফলে বায়ুর ঘনত্ব ও কম থাকে। তাই পাহাড়ি অঞ্চলে জলের স্ফুটনাঙ্ক কমে যায়।বায়ুচাপ কমলে ১০০° সে এর কম উন্নতায় জল ফোটে। তাই চাল, ডাল সিদ্ধ হতে সমস্যা দেখা দেয়।

হাতে কলমে

মাউন্ট এভারেস্ট

উচ্চতা- ৮৮৪৮ মিটার

উদ্ভুতা- ৯০সে.

বায়ুচাপ- ৯৩০ মিলিবার

পুরীর সমুদ্রসৈকত

উচ্চতা-০ মিটার

উষ্ণতা-২০°সে.

বায়ুচাপ-১০০০ মিলিবার

প্রশ্ন ১। এই দুটো জায়গার আবহাওয়া কেমন হতে পারে? পুরীর সমুদ্র সৈকত থেকে মাউন্ট এভারেস্ট গেলে রোজকার জীবনে কী রকম পরিবর্তন হবে?

উত্তর। মাউন্ট এভারেস্ট হল চিরতুষারবৃত্ত শীতপ্রধান অঞ্চল। এখানে বার্ষিক গড় উদ্বৃতা ১০° সেন্টিগ্রেড। সারা বছর এখানে তুষার পাত হয়।

অবার পুরীর সমুদ্রসৈকত হল নাতিশীতোর আবহাওয়া। এখনকার গ্রীষ্মকালে গড় উচ্চতা ২৫° সে থেকে ৩৫° সে.। অর শীতকালে গড় উন্নতা ১৫°সে. থেকে ২৫° সে। এই স্থানে খুব আরামপদক।

       পুরীর সমুদ্র সৈকত থেকে মাউন্ট এভারেন্টের দিকে রওনা দিলে প্রথমেই উচ্চতার পার্থক্য নজরে আসবে। পুরীর নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া থেকে এভারেস্টের শীতল আবহাওয়ায় প্রবেশ করতে হবে। আমরা ঠাণ্ডা অনুভব করব তাই আমাদের পোশাক  পরিচ্ছদেও পরিবর্তন আসবে। পাহাড়ি অঞ্চলে বায়ুর চাপ কম হবে তাই খাওয়া-দাওয়ার পরিবর্তন হবে এছাড়া উদ্ভিদের পার্থক্য নজরে পড়বে। এভারেস্টে প্রচন্ড তুষাপপাতের অন্য কোন গাছপালা নজরে পড়বে না।

সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :

১। বায়ুর চাপ কত?

উঃ। বায়ুর চাপ প্রতি বর্গসেন্টিমিটারে ১ কিলোগ্রাম, আর প্রতি বর্গফুটে ১ টন।



২। বায়ুর চাপ বোঝা যায় না কেন?

উঃ। আমার শরীরের ভিতরেও বাতাস আছে। সেই বাতাসও বাইরের বাতাসের সমানও বিপরীত চাপ দিচ্ছে, তাই বায়ুর চাপ বোঝা যায় না।

৩। মহাকাশচারীদের পোশাকে বাতাস ভরা থাকে কেন?

উঃ। মহাকাশচারীদের পোশাকে বতাস ভরা না থাকলে তাদের শরীরের ভিতরের বাতাসের চাপে শিরা ধর্মনি ফেটে যেতে পারে।

৪। বায়ুচাপ কী? তা কীভাবে বাড়ে?

ডঃ। গ্যাসীয় পদার্থের অণুগুলো আলগাভাবে ঘুরে বেড়ায়, পরস্পরের মধ্যে থাকা লাগায়, কোনো বস্তুর সঙ্গে বাতাসের এই অণুগুলো যখন হাক্কা লাগে, তখন এই ধক্কার কারণে যে চাপ সৃষ্টি হয় তাহাই সাধারণভাবে বায়ুচাপ। 

আয়তন যত কমে অণুগুলোর মাঝের দুরত্ব তত কমে। ফলে ঘনত্ব বাড়ে, অণুগুলোর ধাক্কাও বাড়ে, ফলে চাপও বাড়ে।

৫। বায়ুচাপ মাপার যন্ত্র কী? এটি কে আবিষ্কার করেন? কীভাবে এটির সাহায্যে বায়ুচাপ মাপা যায়?

উঃ। বায়ুচাপ মাপার যন্ত্র হল ব্যারোমিটার। ১৬৪৩ সালে বিজ্ঞানী টরিসেলির আবিষ্কৃত সূত্র অনুসারে পারদ ব্যারোমিটার তৈরি হয়। 

একটা পারদ ভরতি পাত্রে একট এক মুখ বন্ধ ভরতি কাচের নল উপুড় করে বসানো থাকে। বায়ুর স্বাভাবিক চাপে কাচ নলের মধ্যে প্রায় ৭৬ সেমি পারদ থাকে। বায়ুচাপ কমলে পারদ কমে যায় আর বায়ুচাপ বাড়লে পারদ স্তম্ভের উচ্চতা বাড়ে। 

৬। পানীয় জনে প্লাস্টিকের বোতলে অর্ধেকের বেশি গরম জল দিয়ে ভর্তি করে ঢাকনা আটকে রাখলে তা তুবড়ে যায় কেন?

উঃ। বোতলে গরম জল ভরার সঙ্গে সঙ্গে ভিতরের বাতাস গরম হয়ে কিছুটা বেরিয়ে গেছে। বাকি বাতাস ঠান্ডা হয়ে সংকুচিত হয়ে ভিতরে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে। তখন বাইরের বাতাসের চাপে বোতলটা তুবড়ে গেছে।

৭। শীতল মেরু অঞ্চলে বায়ুর চাপ বেশি। উষ্ণনিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুচাপ কম কেন?

উঃ। বায়ুর উষ্ণন্নতার পরিবর্তন হলে বয়ূর আয়তন, ঘনত্বের পরিবর্তন হয়। যেমন বায়ু উত্তপ্ত হলে বায়ুর অণুগুলো গতিশীল হয়ে পড়ে এবং পরস্পরের থেকে দূরে সরে যেতে থাকে। এইভাবে উষ্ণতায়  হালকা প্রসারিত হয়ে ওপরের দিকে উঠে যায় বায়ুর ঘনত্ব কমে যায়। অর্থাৎ নির্দিষ্ট আয়তনের বাহুতে অণুর সংখ্যাও কমে যায় এবং বায়ুর চাপও কমে যায়। বায়ু শীতল হয়ে সংকুচিত হয় ঘনত্ব ও চাপ দুই বেড়ে যায় একারণে শীতলমেরু অঞ্চলে বায়ুর চাপ বেশি। নিরক্ষীয় অঞ্চলে বায়ুচাপ কম।

৮। ভূমির উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর ঘনত্ব কমে কেন?

উঃ। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ এবং ওপরের বায়ুস্তরের প্রবল চাপে বায়ুর অণুগুলো ভূপৃষ্ঠের কাছাকাছি বেশি পরিমাণে থাকে, আর যত ওপরের দিকে যাওয়া যায়, তত পরস্পর থেকে দূরে ছড়িয়ে পড়ে অর্থাৎ ভূমির উচ্চতার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর ঘনত্ব কমে।

৯। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে কোনো কিছু সিদ্ধ হতে দেরি হয় কেন?

উঃ। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে জলের স্ফুটনাঙ্ক কমে যায়। অর্থাৎ বায়ুচাপ করলে জল ১০০°C এর কম উন্নতায় ফুটতে শুরু তাই কোনো কিছু সিদ্ধ হয় না।

১০। পর্বতারোহীরা সঙ্গে অক্সিজেন সিলিন্ডায় নিয়ে যায় কেন?

উঃ। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে অথবা বেশি উচ্চতায় বাতাসের পরিমাণ কমে যাওয়া, বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় শ্বাস নিতে কষ্ট হয় এ কারণে পর্বতারোহীর সঙ্গে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যায়।

১১। ঝড় বৃষ্টি প্রভৃতি দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয় কেন?

উঃ। বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকলে ওই বায়ু জলীয় বাষ্পহীন বায়ুর থেকে হালকা হয় তাই বায়ুর চাপও কম হয়।জলীয় বাষ্প বায়ুতে মিশলে নিম্নচাপ তৈরি হয়, অর্থাৎ বায়ুচাপ কমে যায় তার ফলেই আবহাওয়া অশান্ত হয়ে ঝড় বৃষ্টি প্রভৃতি দুর্যোগপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়।

১২। বায়ুমণ্ডলে বাতাস বাইরে ছিটকে যায় না কেন?

উঃ। পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য বায়ুমণ্ডলে বাতাস বাইরে ছিটকে যায় না।

১৩। সমচাপ রেখা কাকে বলে? দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ। নির্দিষ্ট সময়ে একই পরিমাণ বায়ুচাপ যুক্ত অঞ্চলগুলোকে মানচিত্রে যে কাল্পনিক রেখা দ্বারা যুক্ত করা হয়, তাকে সমচাপ রেখা বলে।

বৈশিষ্ট্য : ১। সমতাপ রেখায় বাড়াপকে মিলিবারে (mb) এককে দেখানো হয়। পৃথিবীতে বায়ুচাপ ৯৮০ mb থেকে ১০০০ mb দেখা গেছে।

২। সমচাপ রেখায় সাধারণত বায়ুচাপের পরিমাণ সমুদ্রপৃষ্ঠের বহুচাপের হিসেবে দেখানো হয়। 

১৪। বায়ুর উচ্চচাপ ও নিম্নচাপের দুটি পার্থক্য লেখো।

বায়ুর উচ্চচাপ

১। যে সমস্ত অঞ্চলে বায়ুর উয়তা কম, অর্থাৎ পৃথিবীর শীতল অঞ্চলগুলোতে বাহুয়ুর উচ্চচাপ দেখা যায়। যেমন শীতল নাতিশীতোয় অঞ্চল, মেরু অঞ্চল।

২। উচ্চচাপের বায়ু শীতল হওয়ার বায়ু সংকুচিত হয়।

বায়ুর নিম্নচাপ

১। যে সমস্ত অঞ্চলে বায়ুর উষ্ণতা বেশি অর্থাৎ উষ্ণ অঞ্চলগুলিতে বায়ুর নিম্নচাপ দেখা যায়। যেমন নিরক্ষীয় অঞ্চল, ক্রান্তীয় অঞ্চল।

২। নিম্নচাপের বায়ু উষু হওয়ায় বায়ু প্রসারিত ও হালকা হয়।




১৫। সাইক্লোন কাকে বলে?

উঃ। বায়ু উচ্চচাপযুক্ত অঞ্চল নিম্নচাপ যুক্ত অঞ্চলের দিকে বয়ে যায়। অর্থাৎ বস্তুর চাপের পার্থক্যই বায়ুপ্রবাহের প্রধান কারণ। বায়ুচাপ সমান করার জন্য আশেপাশের উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে যায় তত বেশি গতিবেগে ওই অঞ্চলের দিকে ছুটে আসে। প্রবল বেগে ছুটে আসা বাতাস বিধ্বংসী রূপ নিলে, তাকে সাইক্লোন, টাইফুন, হ্যারিকেন, টর্নেডো প্রভৃতি বলা হয়।

 শূন্যস্থান পূরণ করো :

১। প্রতি বর্গফুটে বাতাসের চাপ প্রায় ____ ।

উঃ। ১ টন।

২। দৈনন্দিন জীবনে এবং আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে __ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

উঃ। বায়ুচাপ।

৩। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুচাপ ___ । 

উঃ। কমে।

৪। বায়ুর চাপ ___ । 

উঃ। সৰ্বমুখী।

৫। বায়ুর চাপ মাপা হয় ___। 

উঃ। মিলিবারে।

৬। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর চাপ ___ মিলিবার।

উঃ। ১০১৩.২৫ মিলিবার।

৭। পারদ ব্যারোমিটার আবিস্কার করেন ___। 

উঃ। টরিসেলি।

৮। শীতল মেরু অঞ্চলে য়ুর চাপ ____। 

উঃ। বেশি।

৯। বায়ুর স্বাভাবিক চাপে কাচ নলের মধ্যে প্রায় ___ পারদ থাকে।

উঃ। ৭৬ সেমি।

১০। বায়ুর উন্নতার পরিবর্তন হলে বায়ুর আয়তন ____ পরিবর্তন হয়।

১১। প্রতি ____ মিটার উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ১ সেমি পারদ স্তম্ভের সমান বায়ুচাপ কমতে থাকে।

উঃ। ১১০ মিটার।

১২। বায়ু উচ্চচাপ অঞ্চল থেকে _____ অঞ্চলের দিকে বয়ে যায়।

উঃ। নিম্নচাপ।

১৩। সমচাপ রেখাগুলো যেখানে পরস্পরের ___   চলে আসে।

উঃ। সেই অঞ্চলে বায়ুচাপের পার্থক্য খুব বেশি হয়।

১৪। মাউন্ট এভারেস্ট বায়ুর চাপ ___ মিলিবার।

উঃ। ৯৩০ মিলিবার।

• ভুল সংশোধন করো :

১। বায়ুর আয়তন যত কমে অণুগুলোর মাঝের দূরত্ব তত বাড়ে।

উঃ। বায়ুর আয়তন যত কমে অণুগুলোর মাঝের দূরত্ব কমে।

২। পৃথিবীপৃষ্ঠে বা সমুদ্রসমতলে বায়ুচাপ সবথেকে কম।

উঃ। পৃথিবীপৃষ্ঠে বা সমুদ্রসমতলে বায়ুচাপ সবথেকে বেশি।

৩। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর চাপও বাড়তে থাকে।

উঃ। উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে বায়ুর চাপও কমতে থাকে।৪। বায়ুর চাপ একমুখী।

উঃ। বায়ুর চাপ সর্বমুখী।

৫। বায়ুর স্বাভাবিক চাপে কাচ নলের মধ্যে প্রায় ৭৮ সেমি পারদ থাকে।

উঃ। বায়ুর স্বাভাবিক চাপে কাচ নলের মধ্যে প্রায় ৭৬ সেমি পারদ থাকে।

৬। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে জলের স্ফুটনাঙ্ক বেড়ে যায়।

উঃ। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে জলের স্ফুটনাঙ্ক বেড়ে যায়।

৭। বার্ষিক গতির জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাতাস বাইরের দিকে ছিটকে যায়।

উঃ। আবর্তন গতির জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাতাস বাইরের দিকে ছিটকে যায়।

৮। সমচাপ রেখাগুলো পরস্পরকে স্পর্শ বা অতিক্রম করতে পারে।

উঃ। সমচাপ রেখাগুলো পরস্পরকে স্পর্শ বা অতিক্রম করতে পারে না।

৯। উচ্চচাপের বায়ু উদ্বু হওয়ায় প্রসারিত ও হালকা হয়।

উঃ। উচ্চচাপের বায়ু শীতল হওয়ায় বায়ু সংকুচিত হয়।

১০। শীতল ও ভারী বাতাসে জলীয় বাষ্প খুব বেশি থাকে।

উঃ। শীতল ও ভারী বাতাসে জলীয় বাষ্প খুব কম থাকে।

• সত্য মিথ্যা নির্ধারণ করো :

১। আমাদের শরীরেও বাতাস আছে।

উঃ। [✔️]

২। দৈনন্দিন জীবনে এবং আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণে বায়ুচাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

উঃ। [✔️]

৩। ওপরের স্তরে বায়ুর অণুগুলি পরস্পরের থেকে দূরে চলে যাওয়ায় বায়ুর ঘনত্ব বেড়ে যায়।

উঃ। [X]

৪। সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুচাপ ১০১৩.২৫ মিলিবার

উঃ। [X]

৫। বায়ুচাপ কমলে পারদ নেমে যায়।

উঃ। [✔️]

৬। উঁচু পার্বত্য অঞ্চলে বাতাসের পরিমাণ কম হওয়ায় পর্বতারোহীর সঙ্গে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে যায়।

উঃ। [✔️]

৭। বায়ুতে জলীয় বাষ্প না থাকলে বায়ু হালকা হয়।

উঃ। [X]

৮। বায়ুচাপ কমলে জল ১০০° সে এর কম উচ্চতাতে ফুটতে শুরু করে।

উঃ। [X]

৯। নিরক্ষরেখার কাছাকাছি অঞ্চলে আবর্তন বেগ সবথেকে বেশি হয়।

উঃ। [✔️]

১০। শীতল ও ভারী বাতাসে জলীয় বাষ্প খুবই কম থাকে।

উঃ। [✔️]

মন্তব্যসমূহ