ভেবে দেখো খুঁজে দেখো
১। শূন্যস্থান পূরণ করো :
(ক) __ টালি এবং ইট/সিমেন্ট এবং বালি/শ্বেত পাথর ব্যবহার করে বাংলায় সুলতানি এবং মুঘল আমলে সাধারণ লোকে বাড়ি বানানো হতো।
উ: টালি এবং ইট।
(খ) কবীরের দুই পংক্তির কবিতাগুলিকে ___ (ভজন/কথকথা/দোহা) বলা হয়।
উঃ দোঁহা।
(গ) সুফিরা গুরুকে মনে করত __ (পির/মুরিদ/বে-শরা)
উঃ পির।
(ঘ) ___ কলকাতা/নবদ্বীপ/মুর্শিদাবাদ/ছিল চৈতন্য আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র।
উঃ নবদ্বীপ।
(ঙ) ___ নানক/করীর/মীরাবাঈ ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ বা গিরিধানূর সাধিকা।
উঃ মীরাবাঈ।
(চ) দীন- ই- ইলাহি-এর বৈশিষ্ট্য ছিল মুঘল সম্রাট এবং তার অভিজ্ঞাতদের মধ্যে _ (গুরু শিষ্যের/মালিক শ্রমিকের/রাজা-প্রজার) সম্পর্ক।
উঃ গুরু শিষ্যের।
(ছ) শ্বেত পাথরের রত্ন বসিয়ে কারুকার্য করাকে বলে __ (চাহার বাগ পিয়েত্রা দুরা/টেরা-কোটা)
উঃ পিয়েত্রাদুরা।
(জ) মহাভারতের ফারসি নাম __ (হমজানামা/তুতিনামা/রজমনামা)।
উঃ রজমনামা।
(ঝ) (দসবন্ত/মিরসঈদ আলি/আবদুস সামাদ/ __ পরিচিত ছিলেন শিরিনকলম নামে।
উঃ আবদুসসামাদ।
(ঞ) জৌনপুরি রাগ তৈরি করেন __ (বৈজুবাওরা/হোসেন-শাহ শরকি/ইব্রাহিম শাহ শরকি)।
উঃ হোসেন শাহ শরকি।
(ট) শ্রীকৃষ্ণ বিজয় কাব্যের লেখকের নাম _ কাশীরাম দাস/কৃত্তিবাস ওঝা/মালাধর বসু।
উঃ মালাধর বসু।
(ঠ) পারসিক চক্র কাজে লাগানো হতো ____ জল তোলার জন্য/কামানের গোলা ছোঁড়ার জন্য/বাগান বানানোর জন্য।
উ: জল তোলার জন্য।
(ক) নিম্নলিখিত বিবৃতিগুলির সঙ্গে তার নীচের কোন ব্যাখ্যাটি তোমার সবচেয়ে মানানসই।
বিবৃতি—নদীর ধারে শিল্পগুলি তৈরি হতো।
ব্যাখ্যা—১ নদীর ধারে শিল্প তৈরি করলে কর লাগতো না।
ব্যাখ্যা-২ সেখালে সব মানুষই নদীর ধারে থাকতো।
ব্যাখ্যা—৩ কাঁচামাল আমদানি এবং তৈরি মাল রপ্তানির সুবিধা হতো।
উ: কাঁচামাল আমদানি এবং তৈরি মাল রপ্তানির সুবিধা হত।
(খ) বিবৃতি-চৈতন্য বাংলা ভাষাকেই ভক্তি প্রচারের মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করে ছিলেন।
ব্যাখ্যা-১ তিনি শুধু বাংলা ভাষাই জানতেন।
ব্যাখ্যা—২ সেকালে বাংলার সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা।
ব্যাখ্যা—৩ ভক্তি বিষয়ক সব বই বাংলাতেই লেখা হয়েছিল।
উ: সেকালের বাংলার সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা ছিল বাংলা।
(গ) চিশতি সুফিরা রাজনীতিতে যোগ দিতেন না
ব্যাখ্যা—১ তারা বিশ্বাস করতেন যে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লে ঈশ্বর সাধনা সম্ভব নয়।
ব্যাখা—২ তারা রাজনীতি বুঝতেন না।
ব্যাখা- ৩ তারা মানবদরদী ছিলেন।
উঃ তারা বিশ্বাস করতেন যে রাজনীতি জড়িয়ে পড়লে ঈশ্বর সাধনা সম্ভব নয়।
(ঘ) আকবর দীন-ই-ইলাহি প্রবর্তন করেন—
ব্যাখ্যা-১ তিনি বৌদ্ধর্মের অনুরাগী ছিলেন।
ব্যাখ্যা-২ তিনি অনুগত গোষ্ঠী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন
ব্যখ্যা-৩ তিনি যুদ্ধ করা ছেড়ে দিয়েছিলেন।
উ: তিনি অনুগত গোষ্ঠী গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
(ঙ) মুঘল সম্রাটরা দূর্গ বানাতে আগ্রহী ছিলেন-
ব্যাখ্যা-১ দুর্গ বানানোর খরচ ছিল কম।
ব্যাখ্যা-২ দুর্গ বানানো ছিল প্রাসাদ বানানোর চেয়ে সহজ।
ব্যাখ্যা—৩ দুর্গ বানানোর সাম্রাজ্য সুরক্ষিত হত।
উঃ দূর্গ বানানো ছিল প্রাসাদ বসানোর চেয়ে সহজ।
(চ) জাহাঙ্গিরের আমলে ইউরোপীয় ছবির প্রভাব মুঘল চিত্র শিল্পে পড়েছিল-
ব্যাখ্যা-১ এই সময় ইউরোপীয় ছবি। মেখল করণারে ভাসতে শুরু করেছিল
ব্যাখ্যা-২ মোগল শিল্পীর সবাই ছিলেন ইউরোপীয়
ব্যাখ্যা—৩ ভারতীয় শিল্পীরা এই সময় ইউরোপ থেকে ছবি আঁকা শিখে এসেছিলেন।
উ: এই সময় ইউরোপীয় ছবি। মোগল রবারে আসতে শুরু করেছিল।
(ছ) মধ্যযুগের মনিপুরী নৃত্যে রাধাকৃয় ছিলেন প্রধান চরিত্র।
বাহ্যা—১ ভারতের নৃত্যের দেখদেবী হলেন কৃল্প এবং রাধা।
ব্যাখ্যা- ২ এই সময় রাখা বৈয়বধর্ম মণিপুরে বিস্তার লাভ করেছিল।
বাখ্যা-৩ চৈতনাদের ছিলেন মণিপুরের লোক।
উঃ এই সময় রাধা বৈষুধধর্ম মণিপুরে বিস্তার লাভ করেছিল।
(জ) ভারতে প্রাচীনকালে তালপাতার ওপরে লেখা হত—
ব্যাখ্যা- ১ সে-আমলে কাগজের ব্যবহার জানা ছিল না।
বাখ্যা-২ সে আমলে কাগজের দম খুব বেশি ছিল।
ব্যাখ্যা- ৩ সে আমলে ভারতীয়রা কাগজের উপরে লেখার কালি আবিষ্কার করতে পারেন।
উঃ সে-আমলে কাগজের ব্যবহার জানা ছিল না।
৩। সংক্ষেপে (৩০-৫০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :
সুলতান ও মুঘল যুগে ভারতে কোন কোন্ ফল সবজি, শস্যের চাষ সবচেয়ে বেশি হত?
উ: সুলতানি ও মোঘল যুগে ভারতে নানা ধরণের ফল ও সব্জি চাষ হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল আম,জাম কাঁঠাল খেজুর, আঙুর প্রভৃতি। সব্জি—এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল বেগুন, পটল, ঝিঙে, আলু নানান ধরণের উচ্ছে, মুলে প্রভৃতি। শস্য এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল গম, যব, সাঈর্ষা, ময়ূর মুগ প্রভৃতি।
মধ্যযুগের ভারতে ভক্তি সাধক-সাধিকা কারা ছিলেন?
উঃ মধ্যযুগের ভারতে ভক্তি সহক-সাধিকা ভাবানের প্রতি তাদের অসীম ভক্তি শ্রার কথা সর্বত্র প্রচার করেছিলেন। এককথায় তাদের ভঙিনদী বলা হয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন, সাধক রামায়ণ"দ কবীর গুরুনানক শ্রীচৈতন্যদেব প্রমুখ, সাধিকা ভক্তিবাদের সধিকাদের খুব উল্লেখ পাওয়া যায় না। তবে উল্লেখযোগ্য সাধিকা ছিলেন মীরাবাঈ, তিনি ভক্তনগীতির মধ্য দিয়ে শ্রীকৃষ্ণ আরাধনা করেছেন।
সিলসিলা কাকে বলে? চিশতি সুফিদের জীবনযাপন কেমন ছিল?
উ: মধ্যযুগের জীবনযাত্রার উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল সুফি আন্দোলন, হিন্দু মুসলমান বিপরীত মেরুর বাসিন্দাদের একসুত্রে বাঁধতে শহায্য করে ছিল এই সুফি আন্দোলন।
সিলসিলা : সুফি সাধকগন বিভিন্ন গোষ্টিতে বিভক্ত ছিল সুফি সাধকদের সমস্ত গোষ্ঠিকে বলা হত সিলসিলা।ভারতে দুটি সিলসিলা ছিল প্রভাবশালী এরা চিংশতি ও সুহরাবাদি : সুফিদের জীবন যাত্রা ছিল সহজ, সরল, তাদের মুখমণ্ডল ছিল সদাহাস্যময়, ধর্ম-বর্ন-ধনি পবিত্র সব মানুষের গুরুত্ব ছিল তাদের কাজে সমান। তারা অর্থ বা ক্ষমতা দিয়ে মানুষকে বিচার করত না। কোনরকম রাজনীতি, ক্ষমতার লড়াই, দরবার প্রশাসনিক কাজ, সবথেকে তারা নিজেদের বহুদূরে সরিয়ে রাখতেন, তারা মনে করতেন ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি পবিত্র জীবন-যাপন করার মধ্যে দিয়েই সুখ শান্তি লাভ সম্ভব।
দীন-ই ইলাহির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান কেমন ছিল?
উঃ মুখণ, সম্রাট আকবর দীন-ই-ই-ইলাহির প্রবর্তন করেন। সব ধর্মের সার করার সময়ে এইমত বাদ গঠিত হয়েছিল, এই ধর্ম গ্রহণের সময় ব্যক্তিকে কিছু শপথ নিতে হত। (১) শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্যক্তিকে তার জান, মাল, দীন নানুস অর্থাৎ জীবন সম্পাও ধর্ম ও সম্মান ত্যাগ করার শপথ নিতে হত। (২) সুফি গুরুদেব পির বলা হত। শপথ গ্রহণের সময় গুরুর পায়ে মাথা ঠেকিয়ে প্রণাম করতে হত। ঠিক তেমনিভাবে সম্রাটের মাথা ঠেকিয়ে প্রথম করতে হত। (৩) শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষ হলে ওই ধর্ম গ্রহনকারী ব্যক্তিকে সম্রাটের পদ থেকে একটি পতাকা সূর্য আঁকা পদক দেওয়া হত। এছাড়া দেওয়া হত বাদশাহের একটি হাতে আঁকা ছোট ছবি, তারা চিরদিন সম্রাটের অনুগত থাকবে এই শপথ নিত।
স্থাপত্য হিসাবে আলাই দরওয়াজার বৈশিষ্ট্য কী?
উঃ সুলতান আলাউদ্দিন খলজি কুতুবলির এলাকার যে দরওয়াজ্ঞা নির্মান করে ছিলেন তাকে আলাই দরওয়াজ বলা হয়। সুলতানের নাম অনুসারে এই এই কামনাম করণ করা হয়েছে। এর নিম্নসিমিত বৈশিষ্ট্যগুলি হল—(১)এটি কাল বেলে পাথরের তৈরী, (২) দরওয়াক্স'র গায়ে। সেই যুগে আল্লার পরিবর্তে সুলতানের প্রশংসা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। (৩) এটি কুতুবমিনার অঞ্চলের মধ্যে নির্মান করা হয়েছিল।
ক্যালিগ্রাফি এবং মিনিয়েচার বলতে কী বোঝায়?
ক্যালিগ্রাফি : মধ্যযুগে ভারতে ছাপার অক্ষরের প্রচলন হয়নি এমন সমস্ত বই-পত্র সরকারি দলিল-পত্র হাতে লেখা হত। সেকালে সুন্দর হাতের লেখার শিল্পের খুব চর্চা হত একে ক্যাসিগ্রাহি বলে। বাংলায় একে হস্তলিপি দ্যাি বা হস্তলিপি শিল্প বলা হয়।
মিনিয়েচার : এই শব্দটি ইংরেজী শব্দ। একে আমরা বাংলার অপুতজকরও বলতে পারি। মধ্যযুগে বইএর পাতা রঙিন ছবি নিয়ে সংজ্ঞান হত। আকার ও আয়তনে এই ছোট ছবিগুলিকে মিনিয়েচর বলা হয়।
শিবায়ন কী, এর থেকে বাংলার কৃষকের জীবনের কী পরিচয় পাওয়া যায়?
সিবায়ন : মধ্যযুগে শিব ছিলেন তাৎপর্যপূর্ণ সবস্থা। তার প্রভাব সমাজ জীবনে ছিল গভীর। মধ্যযুগে শিব কেন্দ্র করে যে সাহিত্য রচিত হয়েছিল তাকে ধর্বাচন করে। পুরাণে শিবের আহিনীর গান বিদুর্গার খর সংসারের কথা জুড়ে শিবায়ন রচিত হয়েছে।
কৃষ্ণদের জীবনের পরিচয় : শিবায়ন কৃষরে রোজনামচা লিপিবন্ধ করার চেষ্টা হয়েছে।
শিবদূর্গর সংসার—বাংলার কৃষকদের চির অভাবের সংসার, আর পাঁচটা সাধারণ কুমকদের মতো চির অভাবের সংসার। তার পাঁচটা সাধারণ কৃষকদের মতো শিব চাষবাস করেই সংসার চালান।
কাগজ কোথায় আবিষ্কার হয়েছিল? মধ্যযুগের ভারতে কাগজের ব্যবহার কেমন ছিল তা লেখো।
উঃ খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে সম্ভবত কাগজ আবিষ্কার হয়। খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে এশিয়ার মঙ্গলা কাগজ আবিষ্কার করেন, চীন দেশ থেকে ভারতে কারও তৈরির প্রযুক্তি আসে ভারতে কাগজ ব্যবহার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।কিভাবে কাগজ তৈরী হত মধ্য যুগের লেখকারের বর্ণনায় তার পরিচয় পাওয়া যায় কাগজ তৈরি হওয়ার পর থেকেই কাগজে লেখার কাজ শুরু হয়। এর ফলে দেখ পড়ার দ্রুত প্রসার ঘটতে থাকে।
৪। বিশদে (১০০-১২০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :
মধ্যযুগের ভারতের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা কেমন ছিল তা লেখো।
উঃ সবযুগে সর্বকালে সাধারন মানুষের জীবন খুবই সাধারণভাবে কাটত। একটি কুয়া, ডোর বা পুকুর থাকলে ভাবে কেন্দ্র করে ঘরবাড়ি গড়ে ওঠত সে সময় পরিষ্কার ছিল যৌথ।
বাড়িঘর : গ্রামের বাড়িঘর ছিল একেবারে সাধারণ, গ্রামের বাড়িঘর ছিল মাটি, টগি খড় বা পাতা দিয়ে তৈরি।
জীবিকা: গ্রামের বেশির ভাগ লোক কৃষিকাদের সাথে যুক্ত ছিল। তাদের উদয় অস্ত্র পরিশ্রম করতে হত।তখনকার দিনে এমনকার মতো প্রযুক্তির উন্নতি ঘটেনি প্রধান উৎপাদিত দ্রব্য ছিল গম, ধান, তিল, মুগ, মুসুর,পাট বিভিন্ন ধরণের শাকসব্জি, শস্যের একটা বড় অংশ খাজনা হিসাবে দিতে হত বাকি অংশ কৃষকদের হাতে থাকত। সাধারণ চাষীদের অবস্থা ছিল শোচনীয়, সাধারণ মানুষ খুবই দরিদ্র ছিল। তারা পেট ভরে দু'বেলা খেতে পেতো না। উপযুক্ত পোষাকও ছিল না।
আনন্দ উৎসব: আনন্দ বলতে তেমন কিছু ছিল না। জীবন ছিল, একঘেয়েমিতে ভরা তবে বিভিন্ন পালা পার্বনে তারা অনন্দ উৎসব করত, নাচ, গান, জাদু, সংযাত্রা বিভিন্ন পুজায় তাদের আনন্দ হত।
কবীরের ভক্তি ভাবনায় কীভাবে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এক হয়ে গিয়েছিল বলে তোমার মনে হয় ?
উঃ মধ্যযুগে ভক্তিবাদী আন্দোলনের অন্যতম প্রাপ্ত ছিলেন কবীর। তার সমধিক বা কবীর পার্শ্ব নামে পরিচিত। তিনি ছিলেন মনের মানুষ।
কবীরের ভাবনায় সাধারণ মানুষ : ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কবীরের কাছে সকলেই ছিল প্রিয়। তিনি বলতেন সব ধর্মই এক? ধর্মের ভিত্তিতে তিনি মানুষের মধ্যে বৈষম্য করতেন না তার মতে 'রাম হরি আল্লা, সাঁই সাহিব সবই এক একই ঈশ্বরের বিভিন্নলাম ভগবান সকলেই সমান, ভগবান কখন আলাদা হতে পারে না। এই রকমের প্রচারের ফলে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ভেদ অনেকটাই কমে গিয়েছিল। কইর ছোট পদ্য বা ছড়া লিখে উপদেশ দিতেন এগুলিকে দোঁহা বলে। তিনি আরো বলতেন মনের ভপ্তি দিয়ে ভগবানকে ডাকলে নিজের মনেই ঈশ্বরকে খুঁজে পাবে। তার জন্য মন্দির, মসজিদ যাওয়ার দরকার তাই। তার একটি উল্লেখযোগ্য সৌহা হল-জোঁসে তিলমতো হ্যায় জিয়ে চক্মক্ মেঁ আগ/তের সাঁহু তুঝ মেঁ হ্যায়/ তুজাগ সবেঁ তো জগ/তিলে মাধ্যে যেমন তেল থাকে চক্মকি্র মধ্যে যেমন আগুন থাকে তেমনি তোর ভগবান তোর মধ্যে আছে যদি কমতা থাকে তো জেগে ওঠে।
বাংলায় বৈষ্ণব আন্দোলনের ফলাফল কি হয়েছিল বিশ্লেষণ করো।
উ: বাংল বৈষ্ণব আন্দোলনের পথিকৃত তাঁচেতনাম্বে তার এই আন্দোলন বাংলায় ভক্তি জোয়ার এনে ছিল এর ফলাফল নীচে আলোচনা করা হল (১) শ্রীচৈতন্য যে ভক্তি আন্দোলন প্রচার করে ছিলেন তার ফলে বাংলায় বৈষ্ণব ভক্তি আন্দোলন প্রচার করেছিলেন তার ফলে বাংলায় বৈষুব ভক্তি আন্দোলন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তিনি জাতিভেদ মানতেন না এর ফলে জাতিভেদ পুরো উঠে না গেলেও অনেকটাই কমে এসেছিল। (২) চৈতন্যকে কেন্দ্র করে জীবনী সাহিত্যের প্রচলন শুরু হয়। চৈতন্যচরিতামৃত্যের মতো গ্রন্থ রচিত হল। বাংলায় কীর্তন সঙ্গীত ব্যাপকভবে কাজ করে। তবে কীর্তন যে দুইভাবে গাওয়া হত। (১) নগরী উতন, (২) নামকীর্তন।
বাদশাহ আকবরের দীন-ই-ইলাহি সম্বন্ধে একটি টীকা লেখো।
উ: মুঘল বাদশাহ আকবর সকল ধর্মের সারকথাকে গ্রহণ করেন এবং নতুন এক ধর্ম মত প্রচার করেন। আকবর ছিলেন পরমত সহিষ্ণু উদার শাসক সর্বধর্ম সময়ে তিনি এই দীন-ই-ইলাহি ধর্মমত প্রবর্তন করেন। দীন-ই-ইলাহি প্রবর্তন।
পটভূমি : (১) আকবর গোড়া মুসলমান ছিলেন না তার কারণ তিনি মানুষ হয়ে ছিলেন। উদার পরিবেশে, তার মা হামিদা বানু ও শিক্ষক আবদুল লিভিক আকরের মনে উদারতার আলো ফেলে দিয়েছিলেন। (২) ভক্তি আন্দোলন সুফি মতবাদ আকবরকে প্রভাবিত করেছিলে। (৩) ভারতবর্ষ ছিল বহু ধর্মের দেশ, এই দেশে কোন একটি বিশেষ ধর্মকে সবার উপর চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব না আবার ইসরায়েই গেড়ামি বর্জন করে সকল ধর্মের সর সভাবে গ্রহণ করে এই ধর্ম প্রবর্তন করে নিজেকে জাতীয় সম্রাটে পরিণত করেন। দীন-ই-ইলাহী ধর্মমত ও তার প্রসার আকবর সকল ধর্মের মূল বিষয়গুলিকে জানবার জন্যে আলোচনার জন্য ফতেপুর সিরিতে একটি 'ইবাদতখানা' নির্মান করেন। হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান জৈন-বৌদ্ধ প্রায় প্রচলিত সমস্ত ধর্মজ্ঞানি মানুষদের সাথে তিনি আলোচনা করেন এবং এই সিদ্ধান্ত আসেন সকল ধর্মের মূল বক্তব্য এক। তবে আকাবে এই ধর্মমত খুব একটা প্রসার লাভ করতে পারেনি।
(ঙ) মুঘল সম্রাটদের আমলে বাগান তৈরি এবং দুর্গ নির্মাণ সম্বন্ধে আলোচনা করো।
উঃ মোগল সম্রাটরা ছিলেন সৌমিনি। তারা বাগান তৈরী করবে খুবই ভালোবাসতেন, প্রথম মুঘল সম্রাট হিসাবে বাবর ও বাগান তৈরীতে পটু ছিলেন। তার তৈরী বাগানকে চাহাব্বাণ বলা হয়। একটি নির্দিষ্ট জমিকে চারভাগ করে বাগান বানানো হত। চাহারবাগ একটি ফারসি শব্দ হিন্দিতে একে চারবাগ বলা হয়। প্রচুর ফুলের গাছ লাগিয়ে এক রোমান্টিক পরিবেশ তৈরি করা হয়। আকবর জাহাঙ্গীর শাহজাহান সবাই বাগান তৈরিতে আগ্রহী ছিলেন। বাবরের নিশাতবাগ হুমায়ুনের সমাধি মন্দির, তাজমহল চত্ত্বরে এই বাগান গড়ে তোলা হয়েছিল। আকবরের সময় থেকেই দূর্গ নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে ছিল আজমির অগ্রা-সাহোর-কাশ্মীর জলাহাবাদে প্রচুর দুর্গ নির্মিত হয়েছিল। শাহজাহান ও প্রচুর দুর্গ স্থাপন করে ছিল তবে ঔরষ্কাজেবের সময় তেমন কিছু নির্মিত হয়নি।
(চ) মধ্যযুগের বাংলার স্থাপত্য রীতির পর্যায়গুলির মূল বৈশিষ্ট্য কী ছিল?
উঃ ত্রয়োদশ শতকে বাংলায় মুসলমান শাসন গড়ে উঠেছিল এইসময় নতুন নতুন অনেক স্থাপত্য শিল্প গড়ে উঠেছিল। এই সময়ের স্থাপত্যরীতিতে ইটের ব্যবহার ছিল অন্যতম বৈশিষ্ট্য। স্থাপত্য শিল্পগুলি ঢালু ধাঁচের। এই ধরণের কাজ বা মন্দিরগুলিতে যাতে জল না দাঁড়ায় তার জন্যে এই রকম নির্মানকার্য করা হয়েছিল।
স্থাপত্য শিল্পের প্রসার মধ্যযুগে বাংলার স্থাপত্য শিল্পের ইতিহাসকে তিন পর্যায়ে ভাগ করে আলোচনা করা যায়—১২০১ থেকে ১৩৩৯ খ্রিস্টাব্দ এটি প্রথম পর্যায় ১৩৩৩-১৪৪২ এটি হচ্ছে দ্বিতীয় পর্যায়। ১৯৪২-১৫৩৯ তৃতীয় পর্যায়।
বিভিন্ন স্থাপত্যে উদাহরণ : প্রথম পর্যায়ে বাংলার কতোখানি ছিল। গৌড় এই সময়ে কিছু কিছু স্থানের সমাধি। দ্বিতীয় পর্যায় পাওয়ার সিদ্ধ শাহের-আদিনা মসজিদে সেন কিমিরাক্তের সমাধি ও হুগলি জেলার ছোট পান্ডুয়ার মিনার, তৃতীয় পর্যায় এই পর্যায়ে পান্ডুয়ায় একলাখি সমধি, বারক শাহের
দ্বিতীয় পর্যায় : পান্ডুয়ার সিকন্দর শাহারে আদিনা মসজিদে সেন আমি সিরাজের সমাধি ও হুগলি জেলার ছোট পান্ডুয়ার মিনার তৃতীয় পর্যায় এই পর্যয়ে পান্ডুয়য় একলাখি সমধি, বরকে সাহেব দখিল দরওজা তাঁতিপাড়া মসজিদে ফিরোজ মিনার বাড়া সোনা ও ছোট সোনার মসজিদে ইত্যাদি।
(ছ) মুঘল চিত্রশিল্পের উন্নতিতে মুঘল বাদশাহদের কী ভূমিকা ছিল?
উঃ মোগল যুগে চিত্র শিল্পের সবিশেষ উন্নতি হয়েছিল। এই যুগে চিত্রের বিষয় বস্তু ছিল প্রাকৃতিক দৃশ্য পৌরাণিক দৃশ্য রামায়ন ও মহাভারতের কহিনি চিত্রের মাধ্যমে তুলে ধরত। তাছাড়া দরকারি বিষয় বস্তু তো ছিলই। এই শিল্পের কিছু বৈশিষ্ট্য দেখা যায়-
(১) এই সময় চিত্রকলায় ভারতীয় ও পারসীক রীতির সংমিশ্রন হয়েছিল।
(২) টমাস রে সহ বিভিন্ন ইউরোপদের উপস্থিতি ছাপ পড়েছিল।
(৩) মোগল সম্রাটের দরবারে পৃষ্ঠাপোষকতায় দরবারে বাইরে রাজস্থানি ও কাংড়ায় লোকশিল্পের চিত্রকলার বিকাশ লক্ষ করা যায়।
বাবর ও হুমায়ূনের আমলে চিত্রকলা: সম্রাট বাবর ছিলেন সৌন্দর্যের পূজারি। ম্রাট হুমায়ূনের আমলে আবদুস সামাদ পারসিক রীতিতে দস্তান-অ্যামির হামজা নামে চিত্রগুলি আঁকেন।
আকবরের আমলে চিত্রশিল্প: চিত্রশিল্পের বিশেষ আগ্রহী আকবর আবদুস সামানের নেতৃত্বে একটি পৃথক বিভাগ স্থাপন করেন। তাঁর দরবারে ছিলেন আবদুস সামাদ, সৈয়দ আলি ফারুক, শবন্ত বাসোয়ন, তারা চাঁদ, জগন্নাথ প্রমুখ বিখ্যাত চিত্রশিল্পীরা। ফতেপুর সিক্রিডে আঁকা চিত্রগুলি চিত্র শিল্পের উৎকর্ষতার পরিচয় বহন করে।
জাহাঙ্গীরের আমলে চিত্র শিল্প : চিত্রক্লার পৃষ্ঠপোষক সম্রাট জাহাঙ্গীরের দরবারে ছিলেন ফারুক বেগ, আখারিজা, ওস্তাদ মনসুর, বিয়ে দাস, কেশব মনোহর প্রমুখ চিত্রশিল্প জটায়ু বধ, সরণের পুত্রেষ্টি যজ্ঞ প্রভৃতি চিত্রগুলি বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছে।
শাহজাহানের আমলে চিত্রকলা : শাহজাহান স্থাপত্য শিল্পের ভূপ্ন বেশি গুরুত্ব আরোপ করলেও তিনি চিত্রশিল্পেরও অনুরাগী ছিলেন।
ঔরঙ্গজেবের আমলে চিত্রকলা : সম্রাট ঔরঙ্গজেব মূলত ধর্মীয় কারণে চিত্রকার প্রতি আগ্রহ দেখাননি।দরবারি শিল্পের বাইরে রাজপুত শৈলী কাংড়া শৈলী এবং পাঞ্জাব, কাশ্মীর ও বিজ্ঞাপুরি চিত্রগুলির উল্লেখ করা যায়।
ভারতে ফারসি সাহিত্যের শুরু সুলতানি শাসনের হাত ধরে। দশম শতাব্দীতে তুর্কিরা যখন ভারতে আসে তখন থেকেই বোধহয় ফারসির প্রচলন ঘটে। ক্রুউদ্দিন আইবক ও ইংতুৎমিস ফারসি ভাষার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ফারসি ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে বহুক্তি যুগের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় লাহোর শহর হয়ে ওঠে ফারসি ভাষার চর্চার অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। সেসময় ফারসি সাহিত্যিক ও দার্শনিকনের মধ্যে আমির খসরুর লেখা ছিল সবচেয়ে বিখ্যাত। খসন্তু ফারসি সাহিত্যের এক নতুন রচনাশৈল সবক ই হিন্দ-এর আবিষ্কারক। এসময়ে ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে ফারসি হয়ে ওঠে অতি পছন্দের ভাষ্য। মধ্যযুগে বহু রচনা মূল সংস্কৃত থেকে ফারসিতে অনুবাদ করা হয়। ফারসিতে অনুবাদের রেওয়াজ সমানভাবে চলতে থাকে ভূঘলক, সৈয়দ ও ফোদি অমলেও। ফারসির কার্যকারিতা ও জনপ্রিয়তা তারও বেড়েছিল মুঘল আমলে। সম্রাট বাবর ফারসি ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন।তাঁর আত্মজীবনী ফারসিতে দেখা হয়েছিল। হুমায়ূনও ছিসেন ফাবলিপ্রেমী। হোড়-সপ্তদশ শতকে পারস্য থেকে বহু কবি ও সাহিত্যিক এসে মুখগদের রবারে ভিড় জমান। পারস্য ও ভারতের এক সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান ঘটেছিল ফারসি ভাষার মধ্যে নিয়ো। সম্রাট অপরের অাগোরসি ভাষা ও সাহিত্য আরও উন্নত হতে থাকে অকবরের মতো সমটি জাহাঙ্গিরও ফারসির অনুরাগী ছিলেন। শাজাহানের সময়েও এই চর্চা সমনভাবে চলতে থাকে। ঔরজেবের আমলে এই চর্চা করা আসে তবে তাঁর কন্যা উত্তর-উন-নিসার আরসি তথা ভালোবাসতেন ও তাতে কবিতাও লিখতে। উরুগন্ধের নিজের এই ভাষা ভালোমতেই জানতেন। সাধারণের মধ্যেও মধ্যযুগে এই ভাষার চর্চা ভালোমতেই ছিল।
জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি সুলতানি ও মুঘল যুগ বড় প্রশ্ন
সুলতানি এবং মুঘল আমলে সামরিক এবং কৃষি প্রযুক্তিতে কী কী পরিবর্তন দেখা নিয়েছিল বলে তোমার মনে হয়?
উ: মুলতনি ও মোগলযুগে সামরিক প্রযুক্তিতে পরিবর্তন ঘাট (১) খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতকের প্রথমার্ধে চিন থেকে মঙ্গোলিয়া হয়ে ভারতের বাহুদমুক্ত শামেয়াজ আসে। এর পারে ভারতে বারুচালিত রাকোটের ব্যবহার শুরু হয়। (২) খ্রিস্টীয় পঞ্চদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে চিন ও মিশর থেকে ভারতে বন্দুকের প্রযুক্তি এসে পৌঁছায়। ষোড়শ শতকে পোর্তুগিজরা দক্ষিণ ভারতে এই প্রযুক্তির বিস্তার ঘটায়। (৩) মোগলরা ভারতে এসে বন্দুক ও কামানের ব্যবহার চালু করে (৪) খোড়ার পিঠে চেপে সৈনিকের পা রাখার পাদান ব্যবহার ভারতে শুরু হয়।
এর ফলে সামরিক ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল। ফুলতনি ও মোগল যুগে ভারতের কৃষি প্রযুক্তিতে পরিবর্তন ঘটে-
(১) ভারতে প্রাচীনকাল থেকে যে কলম প্রথা চলে আসছিল। এই সময় তাঁর উন্নতি হয়। পোর্তুগিজদের হাত ধরে কিছু উন্নত ইউরোপীয় প্রযুক্তি ভারতে আসে। ফলে ভারতে উন্নতমানের ফল ফুলের চাষ শুরু হয়।
(২) ত্রয়োদশ শতকে পারস্যের বেন্ট এবং মিয়ার লাগানো সাকিয়া বা পারসিক চক্র ভারতে আসে। এটি হল পশুচালিত নাগরদোলার মতো কাঠের যন্ত্র যার সাহায্যে কুয়ে বা গল থেকে জল তোলা হয়।
(৩) মধ্যযুগে ভারতে সেচ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছিল এই সময় কড়া সমাধার তৈরি করে নালার মাধ্যমে জমিতে জল নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হত। এর ফলে কৃষির উন্নতি হয়েছিল
কল্পনা করে লেখো (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে)
(ক) রাজনীতি, জীবন যাপন ও ধর্ম নিয়ে একজন সুহরাবর্দি সুধি সাধকের সঙ্গে কবীরর কাল্পনিক সংলাপ লেখো।
উঃ রাজনীতি : কবীর রাজা, অভিজাত যাদের যত ক্ষমতা তারাই বেশি পাপ করে।
বাহাউদ্দিন : না না আমি তা মনে করিনা। ক্ষমতা থাকলে তো মানুষের ভালো করার ক্ষমতাও বেশি থাকে।দেশের রাজা-বাদশা, রক্তকমর্চারীরাই তো মানুষের মঙ্গল করে।
জীবনযাপন : কবীর গরীব মানুষ ঈশ্বরের আরাধনায় মগ্ন থাকে। ধনী হলেও সব ভুলে যায়। হে ঈশ্বর কোনোদিন আমাকে অর্থে ধনী করে।
বাহাউদ্দিন : আমি মনে করি গরিবী আল্লার অভিশাপ। ধনীরা তার করুণা লাভ করেছেন। পরলে আরামে থাকুন আর আল্লার গুনগান করুন।
ধর্ম : কবীর ঈশ্বরের কী মহিমা। কত জনের কত রকম বিশ্বাস। আমি মনে করি ঈশ্বর, আল্লা সব এক মানুষ সবাই সমান জন্মে–কেউ ছোটো বা বড়ো হয় না। অন্তরে ভক্তি আর পবিত্র মনে তাঁকে ডাকলেই তার দেখা পাওয়া যায়।
বাহাউদ্দিন : আপনার সঙ্গে আমি একমত। মন পবিত্র থাকলে তার দেখা মিলবে।
(খ) মনে করো তুমি চৈতন্যদেবের সময়ে নবদ্বীপের একজন সাধারণ মানুষ। তুমি দেখলে চৈতন্যদেব নগর সংকীর্তনে বেরিয়েছেন। তুমি কী করবে?
উঃ সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নবদ্বীপে আমার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছি। এখন সময় আমার কানে এল খোল ও করতালের আওয়াজ আর কীর্তনের সুর। কী মধুর সেই সুর। আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকলাম। গাইতে গাইতে কীর্তনের দল আমার দিকে এগিয়ে এল। দেখলাম চৈতন্যদেব নগর সংকীর্তনে বেরিয়েছেন করিম চাচা গান ধরেছেন, আর রামু কাকা খোল বাজাচ্ছেন, সঙ্গে একদল লোক দু-হাত তুলে নাচতে নাচতে গাইছেন। এই পরিবেশে আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারি। আমি ঠিক করলাম আমিও ওদের দলে যোগ দেব তার সবার সঙ্গে গলা মিলিয়ে গাইব–
"ভজ গৌরাঙ্গা, কহ গৌরাঙ্গা
লহ গৌরাঙ্গের নামরে।
যেজন গৌরাঙ্গ ভজে
সে হয় আমার প্রাণরে।"
গান গাইতে গাইতে আমাদের পাড়া ঘুরব। আমাদের পাড়ার পরে আমি আর যাব না। কারণ আমাকে সকালের পড়া করতে হবে। এখান ফিরে এসে আমি পড়তে বসব।
(গ) যদি তুমি মুঘল কারখানার একজন চিত্রশিল্পী হতে তা হলে বাদশাহের সুনজরে পড়ার জন্য তুমি কী কী ছবি আঁকতে?
উঃ কল্পনায় আমি মোগল কারখানার একজন চিত্রশিল্পী।
বাদশাহের সুনজরে পড়ার জন্য এবং চিত্রশিল্পী হিসেবে আমি সেই ছবিগুলি আঁকব যে ধরণের ছবি আমি ভালো আঁকতে পারি যে ধরণের ছবি আঁকতে আমার বিশেষ দক্ষতা আছে। সম্রাট শিল্পের সমঝদার সম্রাটকে আমি আমার শিল্পের প্রতি নিষ্ঠা বিষয়বস্তুর গভীরতা ও রঙের বিচিত্র ব্যবহারে মুগ্ধ করতে পারব।
• প্রতিকৃতি : আমি প্রতিকৃতি আঁকতে পছন্দ করি। আমি চেঙ্গিস খান, তৈমুরলঙ্গ, বাবর, হুমায়ুন থেকে আমার সময় পর্যন্ত সব সম্রাটদের ছবি আঁকব।
• স্মরণীয় ঘটনা : আমি সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্মরণীয় ঘটনার ছবি এঁকে মোগল আমলকে তুলে ধরব।
প্রকৃতিক দৃশ্য আমি প্রকৃতির বিভিন্ন দৃশ্যের ছবি আঁকতে ও পছন্দ করি। তাই প্রকৃতির বিভিন্ন ঋতুর বিভিন্ন দৃশ্যের ছবি আঁকব। দরবার ও অন্দরমহলের ছবি আমি মোগল দরবার ও অন্দরমহলের সুন্দর সুন্দর কারুকার্যময় দৃশ্য আঁকব।
বই এবং পাণ্ডুলিপির ওপর ছবি : বই বা পাণ্ডুলিপিতে রঙিন বি থাকলে দেখতে সুন্দর হয় এবং ছবি দিয়ে সহজে বিষয় বোঝানোও যায়। তাই আমি বই-এর বিষয় বস্তুর সঙ্গে মিলিয়ে সুন্দর সুন্দর ছবি আঁকব।
(ঘ) ধরো তুমিই আজ তোমার শ্রেণির শিক্ষিকা শিক্ষক। তুমি বাংলা ভাষায় আরবি এবং ফার্সী শব্দের ব্যবহার সম্বন্ধে পড়াচ্ছে। রোজকার বাংলা কথাকতায় আরবি-ফার্সী শব্দের একটি তালিকা ভূমি ছাত্রছাত্রীদের দিতে চাও। এমন একটি তালিকা ভূমি তৈরি করো। দরবারে একটি বাংলা অভিধানের সাহায্য নাও।
উঃ কল্পনায়-আজ আমি আমাদের শ্রেণীর শিক্ষিকা/শিক্ষক।
আজ আমি বাংলা ভাষায় আরবি ও ফার্সী শব্দের ব্যবহার সম্বন্ধে পড়াব।
আমরা প্রতিদিন বাংলার যে কথাবার্তা ধ্বনি তাতে অনেক আরবি ফার্সী ব্যবহার করি। তুমি কলম ও খাতা নিয়ে আমার কাছে এসো। আমি তোমাকে বাংলার বললাম। কিন্তু জানো এর মধ্যে কলম হল আরবি শব্দ আর মাতা হল ফারসি শব্দ।
মন্তব্যসমূহ