নগর বণিক ও বাণিজ্য । প্রশ্ন উত্তর । ক্লাস সেভেন । BAGOR BANIK BANIJYO QUESTION ANSWER

 ভেবে দেখা                          খুঁজে দেখো 

১। নীচের নামগুলির মধ্যে কোনটি বাক্যগুলির সঙ্গে মিলছে না তার তলায় দাগ দাও:

ক) শাহজানাবাদ, তুঘলকাবাদ, কিলারই পিথেরো দৌলতাবাদ।

খ) তঙ্কা, মোহর, হুন্ডি, জিতল

(গ) নীল, গোলমরিচ, সুতিবদ্ধ। 

(ঘ) রওয়ানি, কসবা, বনজারা, মুলতানি।

(ড) পাণ্ডুয়া, বুরহান, চট্টগ্রাম, গৌড়পুর।

উত্তর। (ক) কিলারই পিথোরা।

(খ) হুণ্ডি

(গ) রুপো।

(ঘ) কসবা।

(ঙ) বুরহাসপুর।

(ক) স্তম্ভ মিল

সিরি –

দিনেমার –

সরাফ

হৌজ

চিরাগ-ই-দিল্লি

 (খ) স্তম্ভ

ডেনমার্কের অধিবাসী

সেখ নাসিরুদ্দীন

আলাউদ্দিন খলজি

মুদ্রা বিনিময়করী

মহম্মদ বিন তুঘলক

উত্তর। 

গিরি – আলাউদ্দিন খলজি

দিনেমার – ডেনমার্কের অধিবাসী

সরাফ – মুদ্রা বিনিময়কারী

হৌজ – মহম্মদ বিন তুঘলক

চিরাগ-ই-দিল্লি – শেখ নাসিরউদ্দিন




৩। সংক্ষেপে (৩০-৩৫টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :

(ক) কী কী ভাবে মধ্যযুগের ভারত শহরগুলি গড়ে উঠত? 

উত্তর : শহর নগর শব্দগুলো আর আর অজানা নয়। নগর শব্দটি এসেছে সংস্কৃত থেকে। আর শহর শব্দটি এসেছে ফারসী থেকে। নানা কারণে যুগের বিবর্তনে শহরগুলি গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে চারটি কারণ বিশেষ উল্লেখযোগ্য।

(১) প্রশাসনিক: প্রশাসনিক কারণে অফিস কাছারির প্রয়োজন হয়। এছাড়া বাদশারা নতুন নতুন রাজধানী গড়ে তুললে শহরের উদ্ভব হয়।

(২) অর্থনৈতিকঃ মধ্য যুগে বড় বড় ব্যবসা বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল—পরবর্তীকালে এইগুলি শহরের রূপ ধারণ করেছিল।

(৩) রাজনৈতিক কারণ : দেশের প্রতির(ার কারণে অনেক সময় রাজধানী পরিবর্তন করতে হয়। ফলে নতুন নতুন শহরের সৃষ্টি হয়।

(৪) ধর্মীয় কারণ : মধ্যযুগে ধর্মীয় মন্দির মসজিদকে কেন্দ্র করে প্রচুর লোকজন আসতেন। এইসব তীর্থযাত্রী ও তাদের নানা প্রয়োজনকে ঘিরে শহর গড়ে ওঠে।

কেন সুলতানদের সময়কার পুরোনো দিল্লির আস্তে আস্তে ক্ষয় হয়েছিল?

উত্তর : দিল্লি দীর্ঘদিন ভারতের রাজধানী ছিল। সুলতানি শাসনে ধীরে ধীরে দিল্লি গড়ে ওঠে আবার একসময় অবক্ষয়ের পথে চলে যায়। সুলতানি শাসনের দিল্লীকে বলা হত কুতুব দিল্লী।

(১) বারবার রাজধানী পরিবর্তন: সুলতানি আমলে বারবার রাজধানী পরিবর্তন করা হয়েছে। এটা পুরাতন দিল্লীর  পতনের অন্যতম কারণ। দিল্লির পরিবর্তে আগ্রা, ফতেপুর সিত্রি, শাহজাহানবাদ প্রভৃতি রাজধানীর মর্যাদা পেয়েছে।

নিজস্ব স্বাধীনতা বজায় রাখা : অনেক সম্রাট নিজস্বতার। ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য পুরাতন স্থান থেকে সরে যেতে চাইতেন। যেমন শাহজাহান নতুন নগরী যেটা ছিল দিল্লী থেকে দূরে অবস্থিত, সেখানে শাহজাহানাবাদ করে

 কেন, কোথায় শাহজাহানাবাদ শহরটি গড়ে উঠেছিল?

শাহজাহানাদ শহরের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট শাহজাহান স্বয়ং। তিনি মসনদের উপর নিজস্ব সার্বভৌমত্ব স্থাপনে আগ্রহী ছিলেন। তাই পুরাতন দিল্লী থেকে দূরে নতুন এলাকায় এই শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে। শাহজাহানাবাদ শহরটি গড়ে উঠেছিল যমুনা নদীর পশ্চিমে একটি উঁচু স্থানে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

 ইউরোপীয় কোম্পানীর কুঠিগুলি কেমন ছিল?

সপ্তদশ শতকে ইউরোপে অনেক বাণিজ্যিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল। এদের মধ্যে পোর্তুগীজ, ডাচ,ইংরেজ, দিনেমার, ফরাসী প্রভৃতি বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান উল্লেখযোগ্য ছিল। এরা প্রায় সবাই ভারতে ব্যবসা করছিল। ভারতের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় কুঠি গড়ে তুলেছিল। তারা এসেছিল মোঘল রাজত্বকালে। তাদের কুঠিগুলি ছিল (১) প্রথমেই কোম্পানির লোকেরা বিশাল বিশাল এলাকার দখল নিত, সেখানে কুঠি গড়ে তুলল। এই কুঠিগুলিতে নিজেদের বাড়ি ঘর স্থাপন করত। (২) কুঠিগুলিকে দুর্গের রূপ দেওয়া হয়েছিল। তাতে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র জমা করে রাখা হত। (২) এখানে বড় বড় গুদাম গড়ে তুলত তাতে নানা বাণিজ্যিক ব্রব্য থকত। (৪) তারা নানা কায়দায় সম্রাটদের খুশি করে অনুমতি আদায় করত। বোম্বাই, হুগলি, চন্দননগর, কলকাতা, মাদ্রাজ প্রভৃতি বিভিন্নস্থানে কুঠিগুলি স্থাপন করা হয়েছিল।

 মুঘল শাসকরা কীভাবে ব্যবসা বাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন? 

ব্যবসা-বাণিজ্য উন্নত হলে তবেই দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি সুদৃঢ় হয়। তাই সবদেশের রাজা বা শাসকরা বাণিজ্যের উন্নতিতে উৎসাহ দিতেন। এ ব্যাপারে মোঘল শাসকরাও পিছিয়ে ছিল না। (১) সম্রাট কর গ্রহণের বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা থেকে শুরু করে যাবতীয় সাহায্য দিতেন

(২) সম্রাটরা বণিকের কাজে কোনদিন হস্তক্ষেপ করতে না। ২.৫ থেকে ৫ শতাংশের বেশী করে নিতেন না।

(৩) ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতির সঙ্গে পরিবহনের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। তাই তারা যথাসম্ভব রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের দিকে নজর দিয়েছিলেন। প্রচুর সবাইখানা নির্মাণ করে বণিকের সাহায্য করতেন।

৪। বিশদে (১০০-২০০টি শব্দের মধ্যে) উত্তর দাও :

খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতকে দিল্লি কেন গুরুত্বপূর্ণ শহর হয়ে উঠেছিল?

উঃ দিল্লী ছিল ভারতের অন্যতম প্রাচীন শহর। এয়োদশ শতক থেকে দিল্লি এমেশ ও(ত্বপূর্ণ শহরের ভূমিকা নিতে শুরু করে। প্রথমতঃ, এয়োদশ শতকে মহম্মদ ঘুরি দিল্লি দখল করেন। ১৯৯২ সালে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে তিনি পৃথ্বিরাজ চৌহানকে পরাজিত করেই দিল্লি অধিকার করেছিলেন। দ্বিতীয়তঃ, তাঁর মৃত্যুর পর তাঁরই সুযোগ্য সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবক দিল্লীতে স্বাধীন দাস বংশের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রাজপুতদের বিলারাই পিথোবাকে কেন্দ্র করেই দিল্লী শহরের প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের রাজধানী হওয়ায় প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক কারণেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

 শাহজাহানাবাদের নাগরিক চরিত্র কেমন ছিল?

উঃ মোগল সম্রাট শাহজাহান দিল্লীর ধ্বংসস্তূপ থেকে দূরে যমুনার পশ্চিম পাড়ে তার রাজধানী গড়ে তোলেন। এখানে নানাধর্মের, নানা বর্ণের মানুষ বাস করত। তাদের মধ্যে ঐক্যের অভাব ছিল না। প্রথমতঃ, দিল্লিতে যে বসতি গড়ে উঠেছিল তা ছিল মিশ্র সংস্কৃতির। এখানে একদিকে ধনী অভিজাত অন্যদিকে গরীব কারিগর শ্রমিক ও বণিক শ্রেণী বসবাস করত। যারা ধনী ছিল টালির অথবা ইট পাথরের বড় বড় বাড়িতে বসবাস করত। বিশাল বিশাল প্রাসাদের পাশে মাটি ও খড়ের বাড়ী ও গড়ে উঠেছিল। এমনকী কুঁড়ে ঘরের ও সারি দেখা যায়। সবাই এর সাথে মিলে মিশে থাকত, কোন শ্রেণী বিভাজন থাকত না।

দ্বিতীয়তঃ, নাগরিকদের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় ছিল। বিভিন্ন ধর্ম সম্প্রদায় একে অন্যের উৎসবে অংশ নিত।শেখ নাসিরউদ্দিন চিরাগ-ই-দিল্লি দরগায় অনুষ্ঠিত আলোর উৎসবে হিন্দু-মুসলমান ও অন্যান্য সম্প্রদায় একই সঙ্গে অংশগ্রহণ করত। এমনকী মহরম উৎসবে শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায় একসাথে অংশ নিত। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামার কোন খবর জানা যায় নি।

 দিল্লির সুলতানদের আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য বিস্তার কেন ঘটেছিল?

উঃ “বাণিজ্যে বসত লক্ষ্মী” —এই প্রবাদ বাক্য সব সময়ে সব যুগে সত্য। তাই সুলতানরাও বাণিজ্যে উৎসাহ দিতেন। মহম্মদ ঘুরীর মৃত্যুর পর কুতুবুদ্দিন দিল্লির শহর গড়ে তুলেছিলেন। ৩২০ বছর এখানে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল। (১) এই সময় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ায় শান্তি-শৃঙ্খলা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। অনুকূল পরিবেশে ব্যবসা-বাণিজ্য দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছিল। (২) এই সময় নতুন নতুন শহর গড়ে ওঠায় প্রচুর লোকজন এসে বাস করতে শুরু করেন। এইভাবে নতুন শহর স্থাপন ও বিকল্প ব্যবসা বাণিজ্য বিস্তারে সহায়ক হয়ে উঠেছিল। (৩)সুলতানগণ নতুন নতুন রাস্তা ও সরাইখানা নির্মাণ করেন। ফলে বাণিজ্যের শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। (৪) শহরগুলিতে ব্যবসায়ী রাজকর্মচারী শ্রমিক কারিগর নানা শ্রেণীর লোক একসাথে বাস করত, বিশাল সেনাবাহিনী ছিল। সুলতান অভিজাতদের নানা জিনিসের প্রয়োজন হয় তাদের প্রয়োজন মেটাতে সুলতানরা ব্যবসায়ে উৎসাহ দিতেন।

                  দেশের ভেতরে সাধারণত দুই ধরনের বাণিজ্য হতো। প্রথমত, গ্রাম ও শহরের বাণিজ্য এবং দ্বিতীয়ত, দুটি শহরের মধ্যেকার বাণিজ্য। জনবহুল শহরগুলোর অধিবাসীদের প্রয়োজন মেটানোর জন্য গ্রাম থেকে শহরে যেসব পণ্য রপ্তানি হতো সেগুলো ছিল কমদামি জিনিস, কিন্তু অনেক বেশি পরিমাণে এইসব জিনিস গ্রাম থেকে শহরে আসত। এদের মধ্যে ছিল নানা ধরনের খাদ্যশস্য, খাবার তেল, ঘি, আনাজ, ফল, লকা ইত্যাদি। শহরের বাজারে এইসব পণ্য বিক্রি হতো। আলাউদ্দিন খলজির আমলে দিল্লিতে চারটি বড়ো বাজার ছিল। এইসব বাজারে খাদ্যদ্রব্য,ঘোড়া, কাপড় ইত্যাদি বিক্রি হতো।

                   আবার এক শহর থেকে আর এক শহরে রপ্তানি হতো প্রধানত বেশি দামের শৌখিন জিনিসপত্র, যেগুলো ধনী,অভিজাতদের জন্যই তৈরি করত কারিগররা। সুলতানদের রাজধানী দিল্লি শহরে সাম্রাজ্যের নানা এলাকা থেকে দামি মদ, সুক্ষ্ম মসলিন বস্ত্র আমদানি করা হতো। তা ছাড়া বাংলাদেশ, করমণ্ডল ও গুজরাতের সুতি ও রেশমের কাপড়ের চাহিদা ছিল দেশের সর্বত্র। এই যুগে প্রথম চরকায় সুতো কেটে কাপড় বোনা শুরু হয়েছিল। সুলতানি যুগে নানা হস্তশিল্পের বাণিজ্যও হতো। এর মধ্যে ছিল চামড়া, কাঠ ও ধাতু দিয়ে তৈরি জিনিস, গালিচা ইত্যাদি। এই যুগেই ভারতে প্রথম কাগজ তৈরি করা শুরু হয়।

 ইউরোপীয় কোম্পানীগুলির আমদানি-রপ্তানীর রেখচিত্র দেখে ওই যুগের বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে কি ধারণা হয়?

উঃ ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে পোর্তুগীজ বণিকরা ভারতে আসার জলপথ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালান।এদেরই পথ ধরে পরবর্তীকালে ইংরেজ, ডাচ, ফরাসী, দিনেমার প্রভৃতি বণিক কোম্পানীগণ এদের সাথে বাণিজ্য করতে শুরু করেন। (১) ইউরোপীয় কোম্পানীগুলির আমদানি দ্রব্যঃ সুতিবস্ত্র, আফিম, গোলমরিচ, নীল, সোরা, কাঁচা রেশম, রেশমবস্ত্র প্রভৃতি।

(২) বিত্রি(স্থানঃ ভারত থেকে আমদানি করা দ্রব্যগুলি বিশেষ করে সুতিবস্ত্র ও আফিম পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব-এশিয়ার দেশগুলিতে বিত্রি( হত। গোলমরিচ, নীল, সোরা, সুতিবদ্ধ, কাঁচা রেশম ইউরোপের বাজারে বিত্রি করা হত।

(৩) রপ্তানি দ্রব্য : ইউরোপীয় বণিকরা এদেশ থেকে মশলা, টিন, তামা, (পা, পশমের সুগন্ধি দ্রব্য প্রভৃতি রপ্তানী করত।

(৪) পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ থেকে ভারতে মশলা, টিন, তামা প্রভৃতি আসত আর পারদ আসত আমেরিকা এবং ইউরোপ থেকে। পশমবস্ত্র ও সুগন্ধি দ্রব্য আসত ইউরোপ থেকে।

৫। কল্পনা করে লেখো: (১০০-১৫০টি শব্দের মধ্যে)

 যদি তুমি সুলতানি আমলে দিল্লির একজন বাসিন্দা হও তাহলে কী কী ভাবে তুমি দৈনন্দিন প্রয়োজনে জল পেতে পারো?

উঃ (১) আমাদের দেশে প্রায় তিন মাস বর্ষা হয়। এই জল ধরে রাখার চেষ্টা করব। তাতে জলের চাহিদা কিছুটা মিটবে। (২) দিল্লির সুলতানরা জল সংকট মোকাবিলার জন্য বড় বড় পুকুর খনন করত। যদিও জমিগুলো ছিল পাথুরে। ইলতুৎমিসের আমলে খোঁড় পুকুরকে বলা হত হৌজ-ই-হাস। (৩) গিয়াসউদ্দিন তার নির্মিত রাজধানীতে তুঘলকাবাদে যে বিশাল জলাধার নির্মাণ করেছিলেন তার থেকে জল পেতে পারি। (৪) বিভিন্ন সময় সুলতানরা নানা হৌজ কেটেছিলেন। তার থেকে ছোট ছোট জলাধার বা নালা কেটে জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়। সেখান থেকে জল পেতে পারি।

 মনে করো তুমি একটি ইউরোপীয় কোম্পানীর ব্যবসায়ী। ব্যবসার প্রয়োজনে তোমাকে বোম্বাই থেকে সুরাট হয়ে আগ্রার দরবারে যেতে হচ্ছে। তুমি কোন পথে যেতে পারো।

উঃ আমি কল্পনায় একজন ইউরোপীয় কোম্পানীর ব্যবসায়ী। এখন প্রন হচ্ছে সুরাট হয়ে আমার মোঘল দরবারে কোন পথে যাওয়া যেতে পারে- (১) এর জন্য প্রথমেই একটা মানচিত্র যোগাড় করতে হবে। ম্যাপে দেখা যাচ্ছে বোম্বাই ও সুরাট বন্দরের অবস্থান, আর আগ্রা হচ্ছে যমুনার তীরে একটা বড় শহর। সুরটি থেকে আগ্রায় অবশ্য দুইভাবে যাওয়া যায়। একটি হচ্ছে মূল পথে আরেকটি হচ্ছে স্থল পথে। আবার দুই পথেই যাওয়া যায়। আবার সুরাট থেকে গুজরাট সেখান থেকে আজমীর হয়ে আগ্রা যেতে পারি।

(২) দ্বিতীয় রাস্তাটি হল বুরহানপুর হয়ে আগ্রা, বোম্বাই থেকে শুদ্ধ পথে সুরটি যাওয়া যায়। সেখান থেকে বোম্বাই এর দিকে আরব সাগর ও ভারত মহাসাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে ভাগীরথীর মোহনায় যাব। ভাগীরতীর পথে হুগলি রাজমহল পাটনা বারানসী হয়ে এলাহাবাদ যাব। এলাহাবাদে ডান দিক থেকে গঙ্গা বাম দিক থেকে যমুনা এসে মিশেছে। আমি বাম দিকে নদীর পথ ধরে আগ্রাতে যাব। 

 খ্রিস্টীয় অষ্টাদশ শতকের গোড়ায় বঙ্গোপসাগরে ভাগীরথীর মোহনা থেকে তুমি নৌকা বেয়ে নদীপথে ক্রমাগত উত্তর দিকে যাচ্ছো। পথে তুমি কোথায় কোথায় ইউরোপীয় কুঠি দেখতে পাবে?

উঃ বাংলায় আমি অষ্টাদশ শতকের গেড়ায় বঙ্গোপসাগরে ভাগীরথীর মোহনা থেকে নৌকা বেয়ে নদীপথে ক্রমাগত উত্তর দিকে যাওয়ার পথে যে সমস্ত কুঠিগুলি দেখতে পাব তা হল:

কলকাতা: কলকাতা থেকে যাত্রা শুরু করলে প্রথমে আমি ইংরেজদের কুঠি দেখতে পাব।

শ্রীরামপুর : ভাসতে ভাসতে এবার আমি ভাগীরথীর উত্তর দিকে এগিয়ে শ্রীরামপুরে দিনেমারদের কুঠির দেখা পাব।

চন্দননগর - শ্রীরামপুরের পরে চন্দননগরে ফরাসীদের কুঠি দেখতে পাব।

চুঁচুড়া -  চন্দননগর থেকে ভাসতে ভাসতে আরো উত্তর দিকে এগিয়ে গেলে চুঁচুড়ায় ডাচদের কুঠি দেখতে পাব।

ব্যান্ডেল - চুঁচুড়ার পরে ব্যান্ডেলে পোর্তুগীজদের কুঠি চোখে পড়ে।


১। সঠিক উত্তরটি নির্ণয় করো :

(অ) 'নগর' শব্দটা __ থেকে এসেছে। (বাংলা, সংস্কৃত, ফারসী)।

উঃ সংস্কৃত।

(আ) 'শহর' কথাটি ___ । (সংস্কৃত, বাংলা, ফারসি)।

উঃ ফারসি।


মন্তব্যসমূহ